বার্তা সংস্থা ইকনা: তিন জন রোহিঙ্গা ১৩ই জানুয়ারি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তরে বোসিডুং শহরের একটি পাহাড়ি জঙ্গলে জালানি কাঠ আনতে যেয়ে আর ফিরে আসেনি।
নিহতদের পরিবারবর্গ জানায়: মিয়ানমারের সেনারা তাদের জানায় যে, তারা ধারণা করেছিল এই তিন জন রাখাইনের বিদ্রোহী বৌদ্ধ এবং তাদেরকে আত্মসমর্পণ করার কথা বলা হয়। কিন্তু তারা ভয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এরফলে সেনারা বাধ্য হয়ে তাদের পয়ে গুলি করে।
নিহতদের পরিবারবর্গ আরও বলেছে: আমাদের এটা বিশ্বাস যে, পায়ে বুলেট বিদ্ধ হওয়ার কারণে আমাদের সন্তানরা গুরুতরভাবে আহত হয় এবং প্রচুর রক্তপাত ঘটে। সেখানে জরুরি সহায়তা না থাকার কারণে তারা নিহত হয়।
সংবাদ উৎস এ ব্যাপারে বলে: তিনজনের মধ্যে একজনকে আহত অবস্থায় বাসাইডং হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বাকী দুইজনকে তাদের পরিবারের নিকটে হস্তান্তর করা হয়। এর দুই দিন পর তৃতীয় নিহত ব্যক্তির লাশ তার পরিবারের নিকটে হস্তান্তর করা হয় এবং জানাজার নামাজ পড়ার জন্য অনুমতি দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতার এ ঘটনাকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নিধনের ধ্রুপদী উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। যদিও মিয়ানমারের সামরিক কর্তৃপক্ষ এবং দেশটির নেত্রী নোবেলজয়ী অং সান সু চির পক্ষ থেকে তা বরাবরই অস্বীকার করা হয়েছে।
এর আগে ২০১২ সালের জুনেও রাখাইন রাজ্য সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আক্রান্ত হয়েছিল। তখন প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা নিহত হন। ওই সময় দাঙ্গার কবলে পড়ে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
মিয়ানমারের উগ্র বৌদ্ধ এবং সেনাবাহিনীর হামলার ফলে রাখাইন থেকে সাড়ে ছয় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম বাস্তুচ্যুত হয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গারা ভয়াবহতার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেছেন, দেশটির সেনাবাহিনীর সদস্যরা পুরুষ সদস্যদের ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করছে, নারীরা প্রতিনিয়ত সেখানে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে আর তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
iqna