সূরা মায়েদা পবিত্র কুরআনের পঞ্চম সূরা। এই সূরাটি মাদানী সূরা। এতে মোট ১২০টি আয়াত রয়েছে এবং পবিত্র কুরআনের ৬ এবং ৭ নম্বর পারায় উল্লেখ করা হয়েছে। নাযিলের ক্রমানুসের একশত ১৩ নম্বর সূরা যা মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে।
সূরা মায়েদা হল কুরআনের বড় সূরাসমূহের মধ্যে একটি সূরা যা আল্লাহর রাসূল (সা.)এর জীবনের শেষের দিকে অবতীর্ণ হয়েছে।
মায়েদা মানে দস্তরখান। এই সূরায় মায়েদা শব্দটি ১১২ এবং ১১৪ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই শব্দটি অন্য কোনো সূরায় ব্যবহৃত হয়নি।
মায়েদা বলতে ঈসা (আ.) এর অলৌকিক ঘটনাগুলির একটিকে বোঝায় যা তাঁর শিষ্য ও ভক্তদের অনুরোধে সম্পাদিত হয়েছিল। যদিও তারা ঈসা (আ.)-কে বিশ্বাস করেছিল, তবুও তারা হযরত ঈসা (আ.)-এর আরেকটি অলৌকিক ঘটনা দেখে তাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে চেয়েছিল। এই কারণে, হযরত ঈসা (আ.) মহান আল্লাহর কাছে তাঁর সঙ্গীদের জন্য বেহেস্ত থেকে মায়েদা তথা খাবার সমৃদ্ধ দস্তরখান পাঠাতে বলেছিলেন।
এই সূরায় হযরত ঈসা (আঃ)-এর জন্ম ও অলৌকিক ঘটনাবলী ছাড়াও, অন্যান্য ঘটনা যেমন চুক্তি ভঙ্গ এবং ইসরাইলের লোকেদের বিচরণ, আদম পুত্র হাবিলকে হত্যার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও গাদীরে খুমের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
এছাড়াও এই সূরাটিতে ইসলামী শিক্ষা ও বিশ্বাস এবং ধর্মীয় বিধি ও কর্তব্য যেমন অযু, তায়াম্মুম, চুরির কিসাস এবং শাস্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
সূরা মায়িদার বৈশিষ্ট্যের মধ্যে তাকওয়ার ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। এই সূরাটিতে «و اتقواللّه» বাক্যাংশটি ১২ বার পুনরাবৃত্তি হয়েছে, যা অন্য যে কোনও সূরার চেয়ে বেশি। ঐশ্বরিক তাকওয়ার উপর এই পরিমাণ জোর এই জন্য যে মানুষ যখন সম্পদ ও মর্যাদায় পৌঁছে, তখন তারা আল্লাহকে উপেক্ষা করে।