তেহরানে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী জাতীয় দিবসের মূল কর্মসূচি পালিত হয় সাবেক মার্কিন দূতাবাস ভবনের সামনে। সেখানে বিশাল এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বক্তারা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে অটল থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
এ ঘটনার স্মরণে প্রতি বছরই ফার্সি ১৩ অবন বা ৪ নভেম্বর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষে রাজধানী তেহরানসহ দেশের বিভিন্ন শহরে লাখ লাখ মানুষ আমেরিকার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে নেমেছেন। রাজধানী তেহরানের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিছিলকারীরা সাবেক মার্কিন দূতাবাসের আশপাশের সড়কগুলোকে সমেবত হন।
এ উপলক্ষে তেহরান সিটি কর্পোরেশন মিছিলকারীদের গুপ্তচরবৃত্তির আখড়ায় যাওয়ার সড়কগুলো চিহ্নিত করে দিয়েছিল। ইরান সময় সকাল ৯টায় মিছিল শুরু হয় এবং দুপুর নাগাদ সাবেক মার্কিন দূতাবাসের আশপাশের সড়কগুলো কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মিছিলকারীরা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং মার্কিন পতাকায় অগ্নিসংযোগ করেন।
ইরানে অনুষ্ঠিত সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী জাতীয় দিবসের মিছিল থেকে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের মোকাবেলা করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
মিছিলের সমাপনী বিবৃতিতে গোলোযোগ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সংসদ, সরকার এবং বিচার বিভাগের বিপ্লবী পদক্ষেপের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করা হয় সেইসঙ্গে তারা কর্মকর্তাদের কাছে সমালোচনা করার সাংবিধানিক অধিকার সংরক্ষণ করারও দাবি জানায়।
'ইয়াওমুল্লাহ' নামে অভিহিত সাম্রাজ্যবাদবিরোধী মিছিলের পর গৃহীত বিবৃতিতে শিরাজের শাহচেরাগের (আ) মাজারে সন্ত্রাসী হামলায় শাহাদাতবরণকারীদের স্মরণ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়: মানবাধিকারের দাবিদার মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব ওই পাশবিক হামলার ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছে। তাদের ওই নীরবতা প্রমাণ করে ইসলামি ইরানের সমগ্র জাতির বিরুদ্ধে তারা কতো গভীর বিদ্বেষ পোষণ করে।
বিবৃতিতে আরও এসেছে: ইয়াওমুল্লাহর মিছিলে যারা অংশ নিয়েছে তারা বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদের ফেতনার ব্যাপারে পরিপূর্ণ সচেতন। তারা আমেরিকা, ব্রিটেন এবং শিশু হত্যাকারী ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর গুপ্তচরদের পরিকল্পনা সম্পর্কেও ভালভাবেই অবহিত। এই অপশক্তি নৈরাজ্য চলাকালীন দিনগুলোতে সাইবার হামলাসহ নাম-পরিচয়হীন সেলিব্রেটিদের কাজে লাগিয়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যাচার ছড়ানোসহ বিচিত্র পন্থায় ইরানে একটি অস্থির পরিবেশ সৃষ্টির ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছে। তাদের অপপ্রচারে তরুণদের অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। সে কারণেই মিছিলকারীরা যুবসমাজকে সঠিক ধারণা দিতে তাদের পরিবার, শিক্ষক এবং দেশের সাংস্কৃতিক কর্মকর্তাদের প্রতি সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান জানায়। বিশেষ করে শত্রুদের পরিকল্পনাকে নিরপেক্ষভাবে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার অনুরোধ জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
ইয়াওমুল্লাহ মার্চে অংশগ্রহণকারীরা দেশের ছাত্র ও শিক্ষকদের ভূমিকার প্রশংসা করে। তারা নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সচেতনভাবে রুখে দাঁড়িয়ে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।