IQNA

ইমাম রেজা (আ.) আহলে বাইতের (আ.) জ্ঞান ও দয়ার সাগর

13:13 - July 29, 2018
সংবাদ: 2606328
আহলে বাইতের অষ্টম ইমাম হযরত আলী বিন মুসা আর রেযা (আ.) হিজরী ১৪৮ সনে জন্মগ্রহণ করেন এবং হিজরী ২০৩ সনের ৩০শে সফর ইরানের তুস নগরীতে (মাশহাদ) শাহাদত বরণ করেন। তার পিতা ছিলেন সপ্তম ইমাম হযরত মুসা বিন জাফর (আ.) তিনি মুসা কাযিম (আ.) নামেই বেশী পরিচিত ছিলেন। আহলে বাইতের (আ.) জ্ঞান ও দয়ার সাগর এ মহান ইমাম (আ.)।

ইমাম রেজা (আ.) আহলে বাইতের (আ.) জ্ঞান ও দয়ার সাগর


বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: পিতার মৃত্যুর পর মহান আল্লাহর নির্দেশে ও পূর্ববর্তী ইমামদের নির্দেশনায় তিনি ইমামতের আসনে সমাসীন হন। আব্বাসীয় বাদশা হারুনুর রশিদের পুত্র বাদশা আমিনের এবং তার অন্য আর এক পুত্র বাদশা মামুনুর রশিদের শাসনামলেই অষ্টম ইমামের ইমামতকাল অতিবাহিত হয়।

নবী বংশের প্রত্যেক ইমামের জীবনই যেন মহাসাগরের মতই মহত গুণ, জ্ঞান, আর কল্যাণের নানা ঐশ্বর্যে কুল-কিনারাহীন এবং শাহাদাতের স্বর্গীয় মহিমায় সমুজ্জ্বল। ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ভাষ্য অনুযায়ী ইমামদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো রাজনৈতিক সংগ্রাম। ইসলামের মধ্যে নানা বিকৃতি চাপিয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সোচ্চার ছিলেন বিশ্বনবী (সা.)’র পবিত্র আহলে বাইতের ইমামগণ।

মামুন ইমাম রেজা (আ.)-কে ইরানের মার্ভ অঞ্চলে নিয়ে এসেছিল। মার্ভ শহরছিল মামুনের রাজধানী। সে এই মহান ইমামের উপস্থিতিতে বিভিন্ন অঞ্চলের জ্ঞানী-গুণীদের নিয়ে জ্ঞানের নানা বিষয়ে অনেক বৈঠক করতেন।

বিশেষজ্ঞ বা পণ্ডিতদের দিয়ে ইমাম রেজা (আ.)-কে জব্দ করাই ছিল এইসব বৈঠকের আসল উদ্দেশ্য। কিন্তু ইমাম রেজা (আ.) নানা ধরনের কঠিন প্রশ্ন ও জটিল বিতর্কের এইসব আসরে বিজয়ী হতেন এবং বিতর্ক শেষে ওইসব পণ্ডিত ও জ্ঞানীরা ইমামের শ্রেষ্ঠত্বও অকাট্য যুক্তির কথা স্বীকার করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতেন।

বাদশা মামুন হযরত ইয়াহিয়া নবীর (আ.) অনুসারী হওয়ার দাবিদার তথা সাবেয়ি ধর্মের এক বিখ্যাত পণ্ডিতকে একবার নিয়ে আসে এ ধরনের এক বিতর্কের আসরে। সেখানে ইহুদি, খ্রিস্টান ওঅগ্নি-উপাসকদের পণ্ডিতরাও উপস্থিতি ছিল।

এই আসরে ইমাম রেজা (আ.) ইসলামের বিরোধিতা সম্পর্কে কারো কোনো বক্তব্য, যুক্তি বা প্রশ্ন থাকলে তা তুলে ধরার আহ্বান জানান এবং তিনি এর জবাব দেবেন বলে ঘোষণা করেন।

ইমরান নামের ওই সাবেয়ি পণ্ডিত অবজ্ঞাভরে বলল: "তুমি যদি না চাইতে তবে তোমার কাছে আমি প্রশ্ন করতাম না। আমি কুফা, বসরা, সিরিয়া ও আরব দেশে গিয়েছি এবং তাদের সবদার্শনিক বা যুক্তিবাদীদের সঙ্গে বিতর্ক করেছি। কিন্তু তাদের কেউই প্রমাণকরতে পারেনি যে আল্লাহ এক ও তিনি ছাড়া অন্য কোনো খোদা নেই এবং তিনি এই একত্বের মধ্যে বহাল রয়েছেন। এ অবস্থায় আমি কি তোমার কাছে প্রশ্ন করতে পারি?

ইমাম রেজা (আ.) বললেন, যত খুশি প্রশ্ন করতে পার। ফলে সে ইমামকে বিভিন্ন ধরনের বেশ কিছু প্রশ্ন করে। ইমাম রেজা (আ.)ও বহু সংখ্যক পণ্ডিত ও বিপুল দর্শকদের উপস্থিতিতে একে-একে ইমরানের সব প্রশ্নের এত সুন্দর জবাব দিলেন যে ওই সাবেয়ি পণ্ডিত সেখানেই মুসলমান হয়ে যান।

captcha