IQNA

ইসলামে রোজা; ইবাদত থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতা

17:00 - April 19, 2022
সংবাদ: 3471733
তেহরান (ইকনা): খাওয়া এবং পাণ করা একটি স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু পবিত্র কুরআনে মানুষ এবং প্রাণীদের খাদ্য গ্রহণের বিষয়টি আলাদা ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং এটি স্বাভাবিক নয়। পবিত্র কুরআনে হালাল খাদ্যের কথা বলা হয়েছ। আর এই বিষয়টি দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় এবং এ ক্ষেত্রে সামাজিক দায়বদ্ধতাও রয়েছে।

খাওয়া-দাওয়া সংক্রান্ত ইসলামের শিক্ষা পুষ্টি সম্পর্কে একটি আচরণগত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে এবং মানব সম্পর্কের উপর নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং শেষ পর্যন্ত একটি সুস্থ সমাজ গঠন করতে চায়। “রোজার” তাকলীফে আমরা এই আচরণগত সিস্টেমের সারাংশ দেখতে পারি।
১)ইবাদত এবং আধ্যাত্মিকতা:


أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ


। (১৮৩) হে বিশ্বাসীগণ! রোযা যেরূপ তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর আবশ্যিক ছিল তেমনি তোমাদের ওপরও তা আবশ্যিক করা হল; হয়ত তোমরা সাবধানী (ও আত্মসংযমী) হবে।
সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩
রমজান মাসে ফজরের আজান হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহারে নিষেধাজ্ঞা এমন একটি কাজ যা মহান আল্লাহর সাথে মানুষের সম্পর্ককে মজবুত করে এবং মানুষের আধ্যাত্মিকতার বিকাশের পথ প্রশস্ত করার লক্ষ্যে প্রস্তাব করা হয়েছে।


«يَا أَيُّهَا النَّاسُ كُلُوا مِمَّا فِي الْأَرْضِ حَلَالًا طَيِّبًا وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ»


হে মানুষ! ভূমণ্ডলে যা আছে তার থেকে হালাল ও পবিত্র জিনিসগুলো (সাগ্রহে) ভক্ষণ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
সূরা বাকারা, আয়াত ১৬৮
"হালাল" একটি সার্বজনীন শব্দ যা ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক অনুমোদিত আচরণকে বোঝায়। হালাল উদাহরণগুলোর মধ্য একটি হল হালাল খাদ্য। আর এই হালাল খাদ্য তিনটি ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রথমত: হালাল পন্থায় খাদ্য সংগ্রহ করা।
দ্বিতীয়ত: স্বয়ং খাদ্য পাক এবং হালাল হতে হবে।
তৃতীয়ত: খাদ্য খাওয়ার পরিমাণ পরিমিত হওয়া উচিত। যদি ভারসাম্যের বাইরে খাওয়া হয়, তবে এটি তথাকথিত অপচয়, যা কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।


«كُلُوا وَاشْرَبُوا مِنْ رِزْقِ اللَّهِ وَلَا تَعْثَوْا فِي الْأَرْضِ مُفْسِدِينَ»


‘আল্লাহ-প্রদত্ত জীবিকা হতে পানাহার কর এবং পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কর না।’
সূরা বাকারা, আয়াত: ৬০
২ ) দুস্থ ও অভাবীদের সাহায্য করা
দৈনন্দিন জীবনকে ক্ষুধার যন্ত্রণা অনুভব করলে, ক্ষুধার্তদের পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও সচেতন হওয়া সম্ভব। রমজান মাসে এই অভিজ্ঞতা দরিদ্রদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে অনেক পন্থাসহ, সমাজে দারিদ্র্য এবং ক্ষুধা দূর করার ব্যাপক আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে। এই সত্যটি একটি ধর্মীয় কাজের সামাজিক ও সংস্কারমূলক দিকগুলিকে নির্দেশ করে যা শুধুমাত্র মানুষ এবং মহান আল্লাহর গোপনীয়তার সাথে সম্পর্কিত নয়, বরং সমাজে প্রবাহিত হয়ে মানব সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশকেও উন্নত করতে পারে।

সংশ্লিষ্ট খবর
captcha